পড়া মুখস্ত রাখার কলাকৌশল
পড়া মুখস্ত রাখার ১৫ টি কলাকৌশল আছে, যেগুলো আপনি মেনে চললে হয়তো আপনার মস্তিস্ক সুন্দর ভাবে কাজ করবে । কারণ সবারই পড়ার সাথে সাথে মনে থাকেনা, আবার কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা কিনা পড়ার সাথে সাথেই মনে রাখে না হয় সব বানিয়ে বানিয়ে সৃজনশীল আকারে লিখতে পারে।
একবার কি লক্ষ করছেন, ক্লাসে ১ আর ২ রোল কারা পায়, যারা ক্লাসে সবচেয়ে মেধাবী তারা পায়। আপনি এটাও বলতে পারেন যে, ১০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ জনই যদি ১০০ এর মধ্যে ৯০ করে পায়। তাহলে ১ রোল কার হবে। এটা ভাবলে বোকামি ছাড়া কিছুনা। কারন ভার্সিটিতে যারা পরিক্ষা দেয়, প্লাস ও গোল্ডেন পাওয়া শিক্ষার্থীরা কোনো সময় চান্স পায়না অপরদিকে ফোর পয়েন্ট পাওয়া শিক্ষার্থীরা চান্স পেয়ে বসে আছে।তাহলে একটু ভাবুন।
নিচে সহজভাবে পড়া মুখস্ত রাখার ১৫ টি কলাকৌশল দেওয়া আছে ।
আমরা আমাদের মনকে সহজভাবে সেটিং করতে পারিনা । কিভাবে পড়াগুলো সহজ ভাবে আমরা আমাদের মস্তিস্কে আয়ত্ব করে আনতে পারবো। কারন আমরা সমাজের বিভিন্ন চালচলনে মানুষের সাথে চলাফেরার মাধ্যমে ভূল করছিনাতো, ওমুকের ছেলে হাত ঘরি পরে, ওমুকের ছেলে ভালো জামা পরে, ক্লাসে ভালো ব্যাগ ব্যবহার করে , বন্ধুদের টাকা পয়সা ভেঙ্গে খাওয়ায় । আপনার মধ্যে কি এগুলো কথা প্রকাশ করে , যদি আপনি এরকম প্রশ্ন নিজে থেকে থেকে তৈরী করেন , তাহলে আপনার মধ্যে থাকা সহজ এবং সুন্দর মেধাকে কলুশিত করবেন। আপনি গরীব শিক্ষার্থী তাতে কি হয়েছে। আপনি গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থী হয়ে থাকলে আপনি সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলবেন না। নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে ভালো ছাত্র হওয়ার আশা করুন। আপনিই হবেন সবচেয়ে মেধাবী।
নিম্নে সহজেই পড়া মুখস্ত রাখার কলাকৌশল সম্পর্কে বলা হলোঃ
১.রুটিন মাফিক কথাটা সবাই বলে, কিন্তু আমরা রুটিন মেনে চলিনা। সেই প্রথম শ্রেণী থেকেই আমরা রুটিন সম্পর্কে জানি, বলতে গেলে বাজারে ৫ টাকার কোনো লিখার খাতা কিনতে গেলেও দেখবেন রুটিন দেওয়া আছে। আপনার লেখাপড়ার জন্য নির্দিষ্ট রুটিন করেন।স্কুল ছুটির আগে ও পরে পড়ার জন্য বাসায় না হলেও চার ঘন্টা সময় আলাদাভাবে দিতে হবে।এতে স্কুলের ও নিজের পড়া দুটোই হবে।
২.খেলাধুলা করবেন যথাসময়ে, স্কুল ছুটির পর বাসায় ফ্রেশ হয়ে হাল্কা খেয়ে নিয়ে বিকেলে বন্ধুদের সাথে খেলবেন। তবে মনে রাখবেন খেলাধুলায় কে হারলো কে জিতলো এগুলো মনে করবেন না। যদি করেন তাহলে আপনি চিন্তিত হবেন। সেই সাথে আপনার মস্তিক্য দুর্বল হবে। মনে রাখবেন ১৫ টি কলাকৌশলগুলোই কিন্তু লেখাপড়া সম্পর্কে আর ভালো ছাত্রের বৈশিষ্ট সম্পর্কে।
৩.আপনি সময়মতো আপনার ধর্মের কাজ করবেন। এবং নামাজ আদায় করবেন ।তাহলে আপনার মধ্যে কোনো কুচিন্তা আসবেনা। মনকে সবসময় পবিত্র করে রাখবেন। তাহলে আপনার মেধাও সবসময় পরিষ্কার থাকব।
৪.অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা কিনা সবসময় বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারে। এগুলো পরিহার করতে হবে। ভালো একজন বন্ধু থাকা চাই, তবে সে ধুমপানমুক্ত থাকতে হবে। যেকিনা আপনাকে সৎ উপদেশ দেয়। বিপদে যেনো আপনার প্রিয় বন্ধু সহযোগিতা করেন। তবে বন্ধুটি যেনো কাছের হয়। বন্ধু বন্ধুই, বন্ধুকে কখনো শত্রু বানানোর চেষ্টা করবেন না।মনে রাখবেন বন্ধু যখন তখন-আবার বন্ধুই করে প্রান হরণ।আর বন্ধুর সাথে কখনোই বিশ্বাসঘাতক করবেন না।
৫. আপনার বন্ধু আপনাকে দিয়ে খারাপ কাজ করায়, কাউকে তার হয়ে কাজ করায়, তার গিফটের জিনিষ আপনাকে দিয়ে দেওয়ায় এগুলো কাজ থেকে বিরত থাকবেন।এগুলো নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনে। মিথ্যে অভিনয় করায় আপনাকে দিয়ে। এগুলো পথে পা বাড়াবেন না। তাহলে আপনার মেধা খারাপ নেশায় পরিনত হবে। যা আপনার মেধা দুর্বল হবে।
নিচে ৬ থেকে ১০ নং প্রযন্ত আপনার মেধা ভালো রাখার কাজ করবে।
৬.আপনার হাতে কি এন্ড্রয়েড আছে। যদি থাকে তবে আপনার ফোনকে ভালো কাজে লাগান। মনে রাখবেন শয়তান কিন্তু মানুষের সাথে সবসময় লেগে থাকে। এ বিষয়ে হাদিস এবং কোরআনে অনেক কিছু দেওয়া আছে। তাহলে এতক্ষণে আপনি বুজতে পারছেন, যাহোক আপনার ফোন দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে আপনি অনেক কাজ করতে পারেন। বর্তমানে ডিজিটাল যুগ , ফোনে বর্তমানে লেখাপড়ার বিষয়ে সকল সফটওয়ার পাওয়া যায়। এডুকেশন এপের মাধ্যমে আপনি আপনার সময়কে কাজে লাগান।তবে আপনার মেধা লেখাপড়ার দিক হিসেবে ভালো থাকবে।
৭.বর্তমানে ইন্টারনেট যুগ । ফেসবুক বা বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে ইনকাম করুন, রেফারেল আয় করুন, এড ফি, দৈনিক ৪ থেকে ৫ ডলার আয় করুন, দৈনিক ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় দিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করুন। চমৎকার পোষ্ট দেখে পা বাড়াবেন না। আপনি একবার চিন্তা করেন, যে এভাবে টাকা কেউ টাকা দিলে কোটিপতি হওয়া ব্যাপার নয়। আসলে এগুলো ৯৯% ভূয়া । এগুলোতে পা বাড়াবেন না। ইনকামের রাস্তাছেড়ে দিয়ে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করুন।
৮.ফেসবুকে বেশি সময় দেওয়া যাবেনা।আসলে ফেসবুক ১৮ বছরের আগে রেজিষ্ট্রেশন নেয়না। তারপর আমরা ১৮ বছরের আগেই ফেসবুক ব্যবহার করি। দীর্ঘক্ষণ ইন্টারনেট চালালে মস্তিষ্কের উপর আঘাত হানে। তাতে মেধা নষ্ট হয়ে যায়, গবেষনায় জানা যায় বেশি ইন্টারনেট চালালে ঘার ও গলার চতুপার্শে ব্যাথ্যাসহ নানা ধরনের রোগ দেখা যায়।সমস্যা হয় মাথার ব্রেনের। মাইগ্রেনসহ নানা ধরনের রোগ দেখা যায়।
৯.আপনি কি রাত জেগে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এটা মোটেই ঠিক না। আমরা রাতে ঘুমাই । আমাদের পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম দরকার। ঘুমে ব্যাঘাত হলে স্মৃতিশক্তিলোপ পায়। ফলে কোনোকিছুই স্মরণ থাকেনা। বারে বারে একই পড়া পড়লেও মনে রাখা যায়না।তাই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম পারতে হবে।
১০. আপনি কি পর্ণোগ্রাফীতে আসক্ত হয়ে পড়েছেন? উত্তর একটাই যে ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন সবস্থানেই, বিভিন্ন সাইট এখন পর্ণোগ্রাফীতে ভরপুর । বিশেষ করে উঠতি বয়সের যুবক-যুবতিদের পর্ণো ধ্বংশ করছে। ফলে নানা রকমের রোগের বাসা বানিয়ে ফেলছে। তাই ভালো মেধা টিকিয়ে রাখতে গেলে আমাদের পর্ণসাইট বা পর্ণ পোষ্ট লেখাগুলো পরিহার করতে হবে।
৫ টি কারনের সমাধান দিতে পারে আপনার নিজের বিবেক
১১.আপনি কি গরীব বন্ধুদের মত টাকা নাই আপনার । তাতে কি হয়েছে। আজকে আপনি লক্ষ করে দেখবেন। গরীবের ছেলে ডাক্তার, ওমুকের ছেলে আজকে শিক্ষক । পান বিক্রেতার মেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট। রিক্সাওয়ালার চেলে ১ বা ২ রোল করছে। আজকে যারাই কষ্ট করে তারাই কেষ্ট লাভ করে। আপনিও চেষ্টা করবেন। দেখবেন সফলতা অর্জন করেছেন।
১২.বন্ধুরা টাকা দিয়ে পার্টি করে, আড্ডা মারে, ফুসকা খায় । আপনি তাদের মতো পারেন না , কারন আপনার টাকা নাই তাই দেখে আপনার খুব কষ্ট হয়।তাদের আছে তারা তো টাকা উড়াবেই আর আপনার নেই এটা ভাবা খুব একটা বোকামি ছাড়া কিছুনা। এগুলো ভাবলে আপনার মনমেজাজকে বিগরিয়ে দেয় আর স্মৃতিশক্তি হ্রাস করে। ফলে আপনার মেধা লেখাপড়ার প্রতি আকর্ষণ কমে যায়।
১৩. আপনার বন্ধুদের ভালো স্কুল বা কলেজ ব্যাগ আছে কিন্তু আপনার নেই। বন্ধুদের ভালো পোষাক আছে কিন্তু আপনার নেই। এটাই বাস্তব। এগুলো ভাববেন না আপনার পরিবারের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু নিয়ে চলুন। সমাজে শুধু সবার সাথে সম্মান দিয়ে চলবেন। তাতেই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
১৪.লক্ষ করেন, আপনি কি টাকা পঁয়সা খরচ করছেন প্রেম করার জন্য। অনেকেই আছে স্কুল কলেজেই প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পরে। আপনি এসব কাজে টাকা নষ্ট করবেন না। যদি করেন তবে , খেয়াল করুন, আপনার আম্মা বা বাবা বাসায় কোনো সময়ে ঔষুধ কেনার টাকা থাকেনা বা ছোটখাটো কিছু কেনার প্রয়োজন হলে বাজার করার টাকা থাকেনা। আর আপনি এগুলো না ভেবে অপ্রয়োজনে টাকা খরচ করছেন । এগুলো থেকে বিরত থাকবেন।তাতে আফনি সফলতা লাভ করবেন।
১৫.প্রতিদিন বাবা ও মাকে কাজে সহযোগিতা করুন। আপনি ছাত্র বলে কাজ করবেন না এমনটি করবেন না। বাবা ও মাকে কাজে সহিযোগিতা করলে তারা খুশি হয়।
সবশেষে বলবো রুটিন মাফিক চলাফেরা করুন। মা বাবাকে কোনো কাজে কষ্ট দিবেন না। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক চলুন । আর আপনি যদি উচ্চ মাধ্যমিক বা অনার্স অধ্যয়নরত অবস্থায় থাকেন তো পাশাপাশি পার্টটাইম যেকোনো কাজ করুন। যাতে আপনি লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পারেন।
আমাদের পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর নিচে কমেন্টস করতে পারেন।
আর আমদের টাইমস বাংলাদেশের সাথেই থাকবেন। আপনার যেকোনো লেখা,গল্প,কবিতা,ফিচার,উন্নয়নমূলক কাজের সংবাদ,হারানো বিজ্ঞপ্তি আমাদের দিন আমরা প্রকাশ করবো।
Discussion about this post